পর-লোক
ইন্দ্রশেখর
“ভয় পাবি না। একদম ভয় পাবি না ওদের।”
মনে আছে, মা। তবুও ভয় পাই। প্রতিটি মুহূর্তে। এমনকি তোমাকেও…
“মাটির পুতুলগুলো মৃত শরীরের রক্তমাংস খেয়ে বেঁচে থাকে। ওরা রাক্ষস। কিন্তু আমাদের ওরা ছুঁতে পারে না।”
জানি মা, জানি। এখন একলা জীবনে প্রতিমুহূর্তেই আমি ওদের শরীর ফুঁড়ে ঘুরে চলি। কতবার তোমার শরীরও ফুঁড়ে চলে গেছি! টেরও পাওনি। তুমি… তুমি আমার ছোঁয়াকে ভুলে গেলে মা! যেতে পারলে?
“মৃতের কফিন ওরা। তুই তো তোর বাপ-ঠাকুরদার অন্ত্যেষ্টি দেখেছিস! কীভাবে ওদের ভ্রূণে মৃত চেতনাদের সমাধি দিয়ে কফিনে প্রাণসঞ্চার হয় সে তো তোর জানা।”
জানি মা, জানি। শত আতঙ্কে, শত ঘৃণাতেও তাই তোমার সমাধিটিকে ছেড়ে যেতে পারি না যে! ওখানে তুমি আছ।
“কখনও সমাধি ভাঙে যদি, কফিনের জানালা দিয়ে আমাদের দেখে ওরা ভয় পায়! আতঙ্কে কেঁপে ওঠে…”
জানি মা! তাই তো বড়ো কষ্ট পেয়েছি আজ। আমার মুখের দিকে চেয়ে ভয়ে নীল হয়ে যাওয়া ছোট্ট শরীরটার চোখের জানালায় আজ আমি তোমাকে দেখেছি মা! বন্দিনী একলা মা আমার।
আমি তোমায় মুক্তি দেব, মা। আজ রাতে, সবাই ঘুমোলে ওই চোখের জানালায় ফের আমি উঁকি দেব। নিঃশব্দ ইশারায় দেহটাকে ডেকে এনে ওদের দশতলার গরাদহীন জানালা দিয়ে…
অলঙ্করণঃ অংশুমান
দারুণ
LikeLike