আগের পর্বগুলো
প্রকৃতির নকশা
গরমকাল চলছে। বন্ধুরা অনেকেই হিমালয়ে বা ঠান্ডার জায়গাতে বেড়াতে গেছ। আবার অনেকেরই যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও যাওয়া হয়নি। গরমের ছুটিতে বোরে হবে ভাবছ। কিন্তু ক্যামেরা হাতে থাকলে আর কীসের চিন্তা?
ফোটোগ্রাফেরদের জন্য গরমকালটা খুব একটা সুবিধার সময় নয়। আউটডোর ফোটোগ্রাফি , ল্যান্ডস্কেপ সবই একটু মুশকিল হয়ে যায়।
তবে যাঁরা ক্যামেরা নাড়াচাড়া করতে ভালোবাসেন তাঁরা কোনো না কোনো বিষয় ঠিক বের করে ফেলেন। স্ট্রিট ফোটোগ্রাফি অবশ্য যে কোনো সময়েই করা যায়। হয়তো তুমি নেচার ফোটোগ্রাফি ভালোবাস। একটু অন্যভাবে যদি প্রকৃতিকে দেখি তাহলে যে কোনো ঋতুতেই তোমার সাবজেক্ট-এর অভাব হবে না। বেশিরভাগ মানুষই গাছ পাতা ফুলের ছবি তুলতে ভালোবাসেন। আমাদের চারিদিকে গাছপালাকেই আমরা হাতের কাছে পেয়ে থাকি। শীতকালে আবার পাতা ঝরে গিয়ে কেবল ডালপালা থাকে।
গাছ মানেই পাতা আর পাতার জন্যই গাছের নানান বাহারি রূপ। কিন্তু পাতা ছাড়াও ডালপালার সৌন্দর্য্যও কিছু কম নয়। সেও এক প্রকৃতির নিজস্ব ডিজাইন।
আমি তো সবসময়ই বলি সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তর রংকে কাজে লাগাতে। এই রঙের ব্যাকগ্রাউন্ড-এ যে কোনো সাবজেক্টই আরো মনোহরণ হয়ে ওঠে। তাই পাতাবিহীন গাছকে হেলা না করে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে ফটো তুলো, দেখবে যে গাছের রূপের দিকে কারোর দৃষ্টি আকর্ষণই হয়নি সেটি তোমার ক্যামেরাতে নতুন রূপ পেল।
ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন করে সাধারণ ছবিকে অসাধারণ করে তোলো। সূর্যাস্তের রংও প্রতিদিন একরকম থাকে না। তাই মাঝে মাঝেই ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়।
একদিন চেষ্টা করলেই কোনো অসাধারণ ছবি তোলা যায় না। চেষ্টা, ধৈর্য, অধ্যবসায় অন্য ক্ষেত্রের মতো ছবিকেও সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করে। শীতকালে বরফে বেড়াতে গেলে গাছের ডালপালাতে ক্রিস্টাল হয়ে থাকা বরফের ছবি তুলতে ভুলো না কিন্তু। সেও এক প্রকৃতির অসাধারণ নকশা।
সবসময় মনে রাখতে হবে আমাদের চারিদিকেই ছবি তোলার বিষয় ছড়িয়ে আছে। একটু বিশেষ দৃষ্টিতে খুঁজে নিতে হবে নিজের পছন্দসই সাবজেক্টকে।
গরমের পরেই আসবে বর্ষা। জলীয় বাষ্প যদিও ক্যামেরার পক্ষে উপযোগী নয়, তাহলেও আকাশের গাঢ় মেঘের খেলা আর চারিদিকের জমা জল ও তোমার ক্যামেরাতে অপরূপ হয়ে উঠতে পারে। প্রাণভরে ছবি তোলো আর চারিদিকের জলছবি প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক তোমার ক্যামেরাতে।