জয়ঢাকের খবরকাগজ–২০১৩ থেকে মনমতানো সমস্ত খবরের অর্কাইভ এইখানে
বন্ধু
একটা চড়ুই জল থৈথৈ বৃষ্টিদিনে ভেজে
গাছগুলো সব সবুজ হল, নতুন সাজে সেজে।।
দুটো চড়ুই সকাল হলে উঠোন বারান্দায়
ঝগড়া করে ইচ্ছে হলে, দু একটা গান গায়।।
তিনটে চড়ুই বায়না করে ভর্তি হবে স্কুলে
পড়াশুনোর ধার ধারে না, সবকিছু যায় ভুলে।।
চারটে চড়ুই বিকেলবেলা ধানক্ষেতে রোদ্দুরে
ভীষণ তাড়া ফিরবে বাড়ি, অনেকটা পথ উড়ে।।
পাঁচটা চড়ুই গরমকালে খানিক ছায়ার খোঁজে
তেষ্টা পেলে জল দিও প্লিজ, সবাই কি আর বোঝে।।
ছটা চড়ুই গাছের ডালে নয়তো ধানের ক্ষেতে
বগল বাজায়, ডিগবাজি খায় মনের আনন্দেতে।।
সাতটা চড়ুই দোল খেত বেশ টেলিগ্রাফের তারে
হাজার হাজার জ্বলত জোনাক রাতের অন্ধকারে।।
আটটা চড়ুই দিগন্ত নীল দিচ্ছে ডানা মেলে
আমিও যেতাম তোদের সাথে একটু খবর পেলে।।
নটা চড়ুই এদিক ওদিক দেখেছ নিশ্চয়
ছোট্ট তো খুব কি আর বোঝে সবকিছুতেই ভয়।।
দশটা চড়ুই বন্ধু ছিল, ছুটির দুপুরবেলা
লুকোচুরি মেঘ রোদ্দুর সমস্তদিন খেলা।।
আজ বিশ্ব চড়ুই দিবস
বেশ লাগলো
LikeLike
দারুণ
LikeLike
সেই যে ধুলোয় ধুলোপুটি খাওয়া
বেড়াল দেখেই হুস করে হাওয়া
চড়া আর চড়ি, ঘুলঘুলি বাসা
সুখে ঘর গড়া খড়কুটো ঠাসা
এসব কি শুধু ছোটবেলাকার!
খুঁজে পেতে গেলে হবে মনভার
চড়াই পাখি র কথা কত্ত ই না আছে।ছোটবেলার “নিজে পড়” তে সেই প্রথম ছবি দেখা।’কাক চড়ুই ছানা ধরল।’এ তো আমাদের বাড়ি হামেশাই দেখা যেত।বাইরের উঠোনে ঝুটোপাটি,আমাদের ভয় পাওয়া আর লড়াই দেখা।দুগগা দুগগা, ছানাটাকে বাঁচিয়ে দাও ঠাকুর।বেঁচে গেল। উফ,আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।
মা কাজে ব্যস্ত। ঠাকুমা আমাদের একদম বুড়ি ছিলনা।আমরা যখন হই তখন তিনি মাত্র ৪৫/৪৬।দিদি আর আমি খেলার সঙ্গী। অবাক প্রশ্ন আমাদের,চড়াই গুলো ধুলোয় কি করে ফুরফুর ক’রে? চান করে ওরা।বোনটি (ঠাকুমা) বোঝাল।কি বিস্ময়! ধুলো মেখে চান!নতুন জিনিস বটে।মা মোটেও পছন্দ করবে না জানি কিন্তু আমার ওই ধুলো মেখে চান এর ইচ্ছে, ইচ্ছে তালিকায় জুড়ে গেল।
এখন ঝাঁ চকচকে কমপ্লেক্স এ ধুলো ই নেই।জানি না চড়ুইপাখি স্নান করে কোথায়।
তারপর চড়াই এল রবীন্দ্রনাথ এর শিশু তে।আমি আজ কানাই মাস্টার এর পোড়ো টা এত লোভী যে চড়াই দেখলেই ছুটে যায় পড়া ফেলে।আমাদের ভবানীপুরের বাড়ির ভেতর উঠোনে রকে তো বেড়ালে হামেশাই ওই…
চড়াই এল উপেন্দ্রকিশোর পড়তে গিয়ে।কাক আর চড়াই।কাক টা চড়ুই এর বুক খুঁড়ে খাবেই খাবে।ভয়ে দম আটকে আসে,কিন্তু চড়াই লড়াকু আর বুদ্ধি বটে তার ঘটে! বিশ্রী কাকগুলো কিছুতেই এঁটে ওঠেনা।
তারপর,খেলতে গিয়ে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে গোনা।আমি আর দিদি আকুল হয়ে ভাবি।কষ্ট পাবার কি আচগে।সবার ভাগে যখন একজন করে রইলই!
চড়াই পাখি বারোটা
ডিম পেড়েছে তেরোটা
একটা ডিম নষ্ট
চড়াইপাখির কষ্ট
চড়াই শিখিয়ে গেল,কিছু নষ্ট হয়ে গেলে কষ্ট পেতে জানতে হয়।একটা ই বা নষ্ট হবে কেন!যেমন ছোড়দাদা(দাদু) বার বার বলতেন ‘waste not want not’, সেইজন্যে?দুজন বসে খুব ভাবতে থাকি।
তারপর কালবোশেখি র ঝড় এল।রাত ফুরোলে নীচে নেমে দেখি দালানের ঘুলঘুলি থেকে খড়কুটো আর সুরকি গুঁড়ো পড়ে মেঝে বোঝাই।সাফ করতে গিয়ে গজগজ করছে মেনকা দিদি,আর তারপর হায় হায়,সাদা সাদা ডিম ভেঙ্গে পড়ে আছে।
টুনটুনি র বই তে “চড়নি, আমি হাঁঁচব”! বলে আমার আর পিঠোপিঠি বোন এর সারা দুপুর জুড়ে পেট ফেটে হাসির দিনগুলোর বয়েস ছিল মাত্র দশ এগারো।
তারপর চড়াই এল,বইমেলায় ভোস্তক এর স্টলে র বই এর মলাটে..,লেখক ভ্লাদিমির না কি যেন নাম।কম কম দাম এর বইগুলো পেতে কোন অসুবিধেই ছিলনা।
মেজদাদা (দাদু) কেন যে এদের চটাপাখি বলতেন কে জানে! এতেও আমাদের হাসির ফোয়ারা।
খুব জ্বালাত পাখিগুলো।শাড়ি শুকোতে দেওয়া, সে তারে বসে পুট করে পটি করবেই।চালের টিনে বসেও তাই,এক কণা কি পড়ল কি পড়ল না,ম্যাজিকের মত ফুড়ুক করে নেমে এল আর নিয়ে বাসায়।এসব দেখার জন্যে আমাদের ছোটবেলায় অখন্ড অবসর ছিল।আর ছিল,মা কে আড়াল করে টুক করে নিজের খাবারের ভাগ দেওয়া।
চড়াই নামে একজন পিসি ছিলেন।পাশের বাড়ি।আইবুড়ো। আমরা বলতাম চ’পিসি।ঠাকুমা বলতেন,’ও চ’,ফুল রাখলাম,নিও।ছাদের কমন পাঁচিলে একবাটি বেল,আর জবা। মায়েরা বলতেন, চ’দি।শুনেছি ওদের দুবোনের নাম চড়াই আর বড়াই।চড়াই পিসি ওরফে পিসি ফুটফুটে পূর্ণিমায় অপূর্ব সাদা সিন্নি মাখতেন।সেই সব সন্ধ্যেগুলোয় আমরা ঘন্টার আওয়াজ পেলেই উদাস পায়ে ছাদের দিকে হাঁটতাম।ঘন্টা থামলেই ব্রতকথা আর তারপর ই চ’পিসি ডাকবেন…..ও কণিকা,মেয়েদের এসে নিয়ে যেতে বলো।
LikeLike
Sundor Lekha,piyalidir lekhatao khub sundor
LikeLike