অনেকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। যে গ্রহাণুটি আসছে সেটা কি পৃথিবীকে ধাক্কা মারবে? যদি মারে তাহলে তো পৃথিবী লন্ডভন্ড হয়ে যাবে? বৈজ্ঞানীকেরা অবশ্য প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন যে সেরকম কোনো সম্ভাবনা নেই। সেটাই প্রমাণিত হল। পৃথিবীর গা ঘেঁষে উড়ে গেল অ্যাস্টেরয়েড ২০১১ ইউডব্লিউ ১৫৮।
গতকাল গ্রহাণুটি পৃথিবীর মাত্র ২৪ লক্ষ কিলোমিটার দূর দিয়ে উড়ে গেল। সাধারণ মানুষের কাছে এই দূরত্বটা অনেক মনে হলেও ব্রহ্মাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে জ্যোতির্বিদদের কাছে এই দূরত্ব খুবই কম। এই দূরত্ব পৃথিবী থেকে শুক্রগ্রহের যা দূরত্ব তার চেয়ে কম। গ্রহাণু চলে গেছে সাধারণ মানুষ হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে। তাদের আর এ নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। কিন্তু বিজ্ঞানীদের ঘুম নেই। বিপুল সম্পদ হাতের সামনে এলেও ধরতে পারলেন না।
গ্রহাণুটিতে লুকানো আছে ১০ কোটি টন প্ল্যাটিনাম। যার বাজার দর ভারতীয় মুদ্রায় ৬৮ লক্ষ কোটি টাকা। কেন এই বিপুল সম্পদ হাত ফস্কে গেল? নাসার বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ যা বললেন তা মোটামুটি এই রকমঃ
(১) গ্রহাণুর থেকে খনিজ সংগ্রহ করে তা রকেটে চাপিয়ে আনতে গেলে যা খরচ পড়বে তা ওই প্ল্যাটিনামের মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। তাই বাণিজ্যিকভাবে এই কাজ লাভজনক নয়।
(২) গ্রহাণুর বুক বিদীর্ণ করে খনিজ সম্পদ তুলে আনার প্রযুক্তি এখনও আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মঙ্গলগ্রহে যে রোবোযানগুলি পাঠানো হয়েছে সেগুলির ক্ষমতা হল মঙ্গল-পৃষ্ঠে সামান্য কিছু অঞ্চল জুড়ে ঘোরাঘুরি করা, কিছু ছবি তোলা আর সেইসঙ্গে সামান্য কিছু খোঁড়াখুড়ি করে কিছু নুড়ি-পাথর সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। গ্রহটির অভ্যন্তর থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খনিজ পদার্থ তুলে পৃথিবীতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা এখনও বহু দূরে। তাই গ্রহাণুটির চলে যাওয়ার দৃশ্য ইনটারনেটে দেখা ছাড়া বিজ্ঞানীদের এই মুহূর্তে আর কিছুই করার নেই।
গ্রহাণুটির সম্পর্কে যাবতীয় খবর জানতে নীচের লিংকে ক্লিক করো
প্ল্যাটনাম গ্রহাণুর খবরটবর
গ্রহাণুর উড়ে যাবার লাইভ টেলিকাস্ট দেখতে নীচের ছবিতে ক্লিক করো