পুরোন বই
নটবর। এক জম্পেশ নাম। ভূতপ্রেত নিয়ে কারবার। তাই সে ওস্তাদও বটে।
কিন্তু নটবর আদতে এমনটা ছিল না। ভবঘুরে টাইপ, ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়েছিল দোর্দন্ডপ্রতাপ মাতঙ্গীঠাকরুনের কাছে। তাপ্পর গপ্পের শুরু। পড়ল পালোয়ান ভুতের পাল্লায়। তাতে তার ভাল হল কি মন্দ হল,সেটা জানতে হলে পড়তে হবে মনোজ বসুর “ওস্তাদ নটবর”। ১৯৭৪ এ এর প্রথম সংস্করণ,আনন্দ পাবলিশার্স থেকে।
মাত্র ৭৫ পাতার পাতলা বই কিন্তু ছুটির দুপুর,শীতের দুপুর মাত করে দেবে, চাইকি দু’একখানা ভূতের স্বপ্ন দেখে ফেলাও বিচিত্র নয়। ১২ খানা গল্পের সাথে বারোখানা মজাদার ছবি। কে এঁকেছেন! বিখ্যাত ইলাস্ট্রেটার সুধীর মৈত্র।
পেত্নীশাঁকচুন্নীরা পাসপোর্টের পরোয়া করে না। তার কাঁধে চেপে দিব্যি নটবর চলে এল বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে। সে না হয় হল, কিন্তু শাঁকচুন্নী হয় কারা, সে কি কেউ জানত, যদি না নটবর গুণিন ব্যাখ্যা করত? খুব ঝগড়াটে বৌ অপঘাতে মারা গেলে শাঁকচুন্নী হয়।
নটবর এর তিনকুলে কেউ নেই তবে তার থাকার মধ্যে আছে বুকভরা সাহস,আর মিষ্টি গানের গলা আর উপস্থিত বুদ্ধি। তাই তো তার পেটজোড়া পিলেটা সে খসিয়ে ফেলল ভূতেদের সাহায্যে কত সহজেই।
নটবর অবশ্য দু’একটা গল্পে অনুপস্থিত। ‘পাঁচটাকার নোট’ এ আসে দুখীরাম। এ গল্পের শেষে এক বুদ্ধি বাতলানো আছে: “পাঁচ টাকার নোট পেলে কদাপি পুরোপুরি খরচা করবে না।”
“টাকার বাচ্চা” গল্পে জানা যাবে “মা টাকা” কী জিনিস।
“থলির বিড়াল” এ তপন আবার নটবরের সাক্ষাৎ পায় আর উপহার পায় বিড়াল যার দৌলতে সে হয়ে যায় হিরো।
“নেকিরাম” এর গল্পে কিশোর মনের উপযোগী করে বোঝানো হয়েছে জীবনদর্শন, “আমি
মরলাম, ওরা সব রইল। ওদের ছেলেপুলে হবে, নাতিপুতি হবে। দেখাদেখি তারাও সব লেগে যাবে। তাদের পরে আরো আবার আসবে”….এইভাবে সত্তরের বুড়ো নেকিরাম বহুদিনের জমা মাটির পাহাড় ভেঙে শেষ করবেই। কোনকিছুই তার কাছে অসাধ্য নয় আর।
প্রতিটি গল্পের মজা আর হাসি। হাসতেহাসতেই নানানরকম জিনিস শিখে ফেলা নিজের অজান্তে। এ বইয়ের ছবিগুলি এক কথায় অনবদ্য। কয়েকটি লাইনের আঁচড়ই জোগাবে অফুরন্ত মজা।
chobi ta kotha theke!?
LikeLike