সংহিতা -র সমস্ত লেখা একত্রে
দক্ষিণ বঙ্গের শাল জঙ্গলে তিন রকমের মাশরুম পাওয়া যায় যা খাওয়া যায়। এগুলো শুধু খাওয়াই যায় না, এগুলো ভীষণ সুস্বাদু।
বর্ষাকালে ভ্যাপসা গরম আবহাওয়ায়, মাটিতে জমা ঝরে পড়া পাতায় গজায় এসব মাশরুম। পচা পাতা থেকেও ভাপ ওঠে। শালবনের পাতার ছায়ায় সরাসরি রোদের থেকে আড়ালে থাকে এসব মাশরুম। মাটিতে বছরের পর বছর ধরে ঝরে পড়া আর জমে থাকা মাশরুমের বীজ ঘুমিয়ে থাকে সঠিক আবহাওয়া তৈরি হওয়া অবধি। তারপর তারা জেগে ওঠে আর ঝটপট বেড়ে ওঠে, বীজ ছড়ায় আর মরে যায়।
মরে যাওয়ার আগে তারা মানুষের পেটেও যায়। প্রোটিনের উৎস বলে। জঙ্গল এলাকার মানুষ সারা বছর মুখিয়ে থাকে মাশরুমের অপেক্ষায়। বছরে কেবল মাত্র কদিনের জন্য এই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার পাওয়া যায় বলে এটি বেশ দুর্লভ এবং দামী।
সহজেই এই সব মাশরুমকে সহজলভ্য আর সস্তা করে ফেলা যায় যাতে অনেক মানুষের পুষ্টির জোগাড় হতে পারে। শুধু কিছু বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি দিয়ে জেনে নিতে হবে কতটা গরম (কত তাপমাত্রায়) আর কতটা ভ্যাপসা (কী পরিমাণ আর্দ্রতায়) হলে মাশরুমের বীজেরা জেগে ওঠে। তারপর এক বছরের মাশরুমকে শুকিয়ে রেখে দিতে হবে পাত্রে রাখা মাটিতে।
বছরের যেকোনো সময়ে নাইলন এবং প্লাস্টিক সুতোর টানা-পোড়েনে বোনা জাল দিয়ে তাঁবু বানিয়ে, তার মেঝেতে ভিজে খড় বা ভিজে শুকনো পাতা ছড়িয়ে মাশরুমের বীজ ভরা মাটি ছড়িয়ে দিতে হবে খড় বা পাতার উপর। এরপর তাঁবুর জালের নাইলন আর প্লাস্টিকের পরিমাণ বদলে বদলে, তাঁবুর ভেতর থেকে থেকে জল ছিটোনোর ব্যবস্থা করে, তাপমাত্রা আর আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে উপযুক্ত তাপমাত্রা আর আর্দ্রতায় পৌঁছোতে হবে। তাহলেই জেগে উঠবে মাশরুমের বীজ। জঙ্গলের বদলে ক্ষেতে কিংবা বাগানে চাষ হয়ে যাবে জঙ্গলের মাশরুম। হয়ে যাবে সস্তা আর সহজলভ্য।