উমা ভট্টাচার্যের সব লেখা
হুয়াংপু নদী আর আর তার স্নেহধন্য সাংহাই নগর
উমা ভট্টাচার্য
২০১৬ সালে গিয়েছিলাম চীনের দুঃখ-হোয়াংহো নদী দেখতে। এবারের বিশ্বের জানালাপথে দেখে নেব এখন কেমন আছে সেই নদী আর তার খুব কাছের শহরেরা।
ছেলেবেলায় ইতিহাস বইতে পড়েছিলাম চীনদেশের সবচেয়ে বড় নদী হোয়াংহো, সে নাকি চীন দেশের দুঃখের নদী। হবে নাই বা কেন?ফি বছর বন্যায় ভাসিয়ে দিত আশেপাশের জনবসতি,মানুষের আশ্রয়টুকু কেড়ে নিত,কত মানুষ,পশুর জীবন নিত,ধন সম্পদ হারিয়ে মানুষের দুর্দশার শেষ থাকত না। । ২০১৬ সালে সুযোগ এল চীন ভ্রমনের সময় দেখা হল হোয়াংহোর সাথে। গিয়ে শুনি সে নদীর নাম এখন আর হোয়াংহো নয়, হুয়াংপু বা হোয়াংপো। রোমানরা নাম দিয়েছিল হোয়াংপো। আরও প্রাচীন কালে স্থানীয় মানুষ আর প্রকৃতি প্রেমিক কবিরা নাম দিয়েছিলেন ‘চুনসেন’ নদী।
বিশ্বের জনবহুল শহরগুলোর মধ্যে প্রধান একটি নগর ও সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এক বানিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইয়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে প্রাণদায়িনী হুয়াংপু। এখন সে আর চীনের দুঃখ নয়, এক শান্ত, বাধ্য, নাব্য নদী। হুয়াংপু নদীর দুইপারে দুই বিখ্যাত অঞ্চল হল পুডং আর পুসি বা পুক্সি। নদীর পশ্চিম পারে পুসি বা পুক্সি প্রাচীন জনপদ,এই দিকেই তৈরি করা হয়েছে হুয়াংপুর বাঁধ। দীর্ঘ, চওড়া আর উঁচু এই বাঁধকে ওদেশে বলে বুন্দ(BUND)।
বুন্দের পশ্চিমেই সাংহাইয়ের পূর্বতন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অঞ্চল এই পুসি,ছিল একটি আন্তর্জাতিক বসতি অঞ্চল। এখানে প্রধানত ছিল ইংরেজদের বসতি। পরে আমেরিকানরাও এসে বাস করতে শুরু করে। তাই এখানে দেখা যায় পুরোনো আমলের বড় বড় সুন্দর অট্টালিকা, প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন। প্রায় প্রতিটি বাড়ির একতলাটিতে রয়েছে নানা পণ্য আপণ। নানা জিনিসপত্র আর স্যুভেনিরের দোকান,রেস্টুরেণ্ট। এখনও পুসি সাংহাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক বসতি অঞ্চল,আর আমোদপ্রমোদের জায়গা,‘সাংহাই গ্র্যাণ্ড থিয়েটার’,‘সাংহাই মিউজিয়াম’এখানেই অবস্থিত। বাঁধের পাশেই চওড়া রাস্তা ঝোংশান রোড। নদীর তীরে পুসির এক রেস্টুরেন্টে বসেই অনেকক্ষণ ধরে দেখছিলাম বহতা নদীর সৌন্দর্য,পণ্যবাহী নৌকার চলাচল আর নদীর অপর তীরের সমৃদ্ধ পুডং অঞ্চলকে। বর্তমান সাংহাই পৌর এলাকার মধ্যেই যুইজিয়াজিয়াও(Zuijiajiao)শহরের পশ্চিমদিকে এক স্বাদু জলের হ্রদ ‘দিয়ানশান’ থেকে উৎপন্ন হয়ে বহুপথ পেড়িয়ে ১১৩ মিটার দীর্ঘ নদীটি সাংহাইয়ের বুক চিরে বয়ে চলেছে। পথে অতিক্রম করেছে দশটি জেলা। শেষে গিয়ে মিশেছে বন্ধু ইয়াংসিকিয়াং নদীতে। এরপর দুই বন্ধুনদী মিলিতভাবে গিয়ে পড়েছে পূর্ব চীন সাগরে। ইয়াংসিকিয়াংয়ের চলার পথে শেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ উপনদী হুয়াংপু। নদীতে আছে প্রচুর জল,কারণ সুঝাউ ক্রিক নামে একটি উপনদী এসে জলের যোগান দিচ্ছে হুয়াংপুকে। গড়ে ৪০০ মিটার চওড়া আর ৯ মিটার গভীর হুয়াংপুতে সারাদিন চলে বড় বড় জলযান,বাণিজ্যতরণী, রাতে জলে ভাসে পর্যটকদের নিয়ে প্রমোদ তরণী। ভেসে চলে বালি,বাঁশ,খড় ইত্যাদি বোঝাই পাতলা পাতলা নৌকা। চিনের এক ল্যান্ডমার্ক এই নদী চীনের পানীয় জলের উৎস,প্রচুর মাছের যোগানদার।
নদীর ইস্ট ব্যাঙ্কে পুডং থেকে ওয়েস্ট ব্যঙ্ক পুসিতে পারাপারের জন্য আছে নানপু, লুপু, ইয়াংপু, যুপু, সংপু, মিনপু নামে পু-অন্তক নানা ব্রিজ। বৃহত্তম জনবহুল উন্নত নগর সাংহাইয়ে সারা বছর পর্যটকদের ভিড়ও ত কম নয়। তাই যানজট এড়াতে এত ব্রিজের ব্যবস্থা। এছাড়া আছে জলপথে নৌকা,লঞ্চ। । শুধু কি ব্রিজ আর জলপথেই পারাপারের ব্যবস্থা? মোটেই না। আছে নদীর তলা দিয়ে অনেক টানেল-সাবমেরিন পথ। এছাড়া আছে সাংহাই মেট্রোর সাবমেরিন লাইন। এককালের দামাল,দুরন্ত,দুষ্টু নদী আজ এক বাধ্য নদী হয়ে উঠেছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রথম শ্রেনীর জলপথ।
নদীর তলা দিয়ে সবচেয়ে মজার পারাপারের পথটি দিয়েই আমরা গিয়েছিলাম পুডং থেকে পুসিতে। দীর্ঘ সাবমেরিনপথ পেড়িয়েছিলাম ম্যাগলেভে চড়ে। পাশাপাশি দুটি লাইনে দুটি কামরা দাঁড়ায় প্রবেশপথ আর বহির্গমন পথের মুখে। একটি আপ একটি ডাউন লাইন, টানেলের ভিতরে একটিই লাইন। একটি ম্যাকলেভ পুডং থেকে পুসিতে পৌঁছলে,পরেরটি পুসি থেকে যাত্রী নিয়ে টানেলে ঢোকে পুডংএর উদ্দেশ্যে। এই সবমেরিন পথে চলার মজার অভিজ্ঞতা ভাষায় বর্ণনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই একটি ছোট্ট ভিডিও যোগ করছি এইসঙ্গে।
ম্যাগলেভ-এর কেবলকারটির চারদিকেই কাচের স্বচ্ছ দেওয়াল। চার দেওয়ালেই আছে ধরে দাঁড়াবার জন্য স্টিলের তৈরি আনুভুমিক হ্যান্ডেল। সেটি ধরে চলমান কারে দাঁড়িয়ে থাকা যায় আর চলার পথে দেখানো নানা আলোকসজ্জার দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সাংহাইয়ের নতুন বানিজ্যিক জেলায় পুডং এর লিউজিয়াযুই(Lujiazui)স্টেশন থেকে ‘বুন্দ সাইট সিইং টানেল’ দিয়ে সাবমেরিন মেট্রোর পথে পুসির দিকে চলল। ট্রেন চলতে শুরু হতে না হতেই অন্ধকার সুড়ঙ্গে প্রবেশ। ভাবলাম এ আবার কেমন,অন্ধকারে কতটা পথ যেতে হবে। ভাবতে না ভাবতেই শুরু হয়ে গেল আলোর খেলা। । শুরুতেই গম্ভীর স্বরক্ষেপনে ইংরেজীতে শুরু হয়েছিল কাব্যিক ধারাভাষ্য, ‘আমাদের পার্থিব কোন পথ নেই জানা, আমরা কোন পথে চলেছি তাও অজানা। আমরা চলেছি পৃথিবীর কেন্দ্রপথের প্রায় মধ্য দিয়ে’। এরপর শুরু হল ‘নিওন ফ্লাশ লাইটের’ কারসাজি। প্রথমে নানারঙের আলোকবৃত্ত পাক খেতে খেতে টানেলের বৃত্তাকার দেওয়ালে ঘুরতে ঘুরতে চলল খানিকটা। এরপর মিউজিকের সঙ্গে নানা ছবি,নানা ছায়াচিত্র দেখানো চলল খানিক পথ। টানেলের মাঝামাঝি যেতেই শুরু হল নানা ভৌতিক শব্দ, সঙ্গে ভূতুড়ে চেহারাদের আবির্ভাব। দেখতে দেখতে সুরঙ্গ শেষ হতে চলল। তখন আবার শুরু হল নানা রঙের আলোকবৃত্তের ঘূর্ণন। এতক্ষণ মনেই পড়েনি যে আমরা হুয়াংপুর নীচের সুড়ঙ্গপথে চলছি। মনোলোভা আলোর কারসাজি দেখতে দেখতে কখন যে ৬৪৭ মিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথ শেষ হল বোঝাই গেল না। ঘড়ি দেখে বুঝলাম মাত্র আট মিনিট সময় লেগেছে। আমরা পৌঁছে গেলাম নদীর পশ্চিম পাড়-পুসিতে।
ম্যাগলেভ থেকে নেমে এসকালেটরে ওপরে উঠে আবার নীচে নামলেই পুসি শহরের ঝোংশান(Zhongshan)রোড। একেবারে বাঁধের বা বুন্দের নিচ থেকেই ঝাঁ চকচকে রাস্তাটা চলেছে হুয়াংপু নদীর সমান্তরালে। কিছু দূরে দূরেই চওড়া সিঁড়ি উঠে গেছে ১০/১২ ফুট উঁচুতে বুন্দের ওপর। সিঁড়ি বেয়ে বুন্দে ওঠা গেল। বিশাল চওড়া বুন্দ। বসার জায়গা, কেয়ারি করা ছোট ছোট বাগান, ছায়াময় বাঁধানো গাছতলা, সারি সারি মার্বেলের লনবেঞ্চ। বাঁধের ওপর অসংখ্য মানুষ,নানাদেশের পর্যটক,স্থানীয় স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। বেলুন, বল নিয়ে বাচ্চারা খেলছে। বাঁধের ওপর যতটুকু চোখে পড়ে সবটুকুই পরিচ্ছন্ন। নদীর ওপারেই দেখা যাচ্ছে পুডং জেলার লিউজিয়াযুই(Lujiazui)বানিজ্যিক এলাকার স্কাইলাইন। হুয়াংপু নদী যেখানে পুবদিকে বাঁক নিয়েছে, সেখানে তৈরি হয়েছে একটি উপদ্বীপ(পেনিনসুলা)-‘লিউজিয়াযুই’। উনিশ শতকের শেষের দশকেই এই এলাকার উন্নয়ন শুরু হয় এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে। বুন্দের সামনেই দেখা গেল নৌকা, লঞ্চ আর নীল আকাশে ভেসে যাওয়া সাদা মেঘের ভেলার প্রতিফলন বুকে নিয়ে বহমান প্রাচীন চীনের দুঃখ- হুয়াংপু। সেদিনের রৌদ্রোজ্জল আকাশ ছিল ঘন নীল। আকাশের নীলিমার প্রতিফলনে নদীর জল ঈষৎ নীলচে ঘোলাটে। ওপারে সারি সারি বিশাল উচ্চতার আকাশচুম্বী বহুতল,সবগুলিই বিখ্যাত বানিজ্যিক ভবন। স্থাপত্যের উৎকর্ষতায় আর বৈচিত্র্যে কোনটি কারো থেকে কম যায়না। এইসব উন্নয়নের ব্যাপারে হুয়াংপু নদীর অবদান অনস্বীকার্য!
পুডং এর সমৃদ্ধ এলাকা ‘লিউজিয়াযুই’য়ের ১০৮ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে রয়েছে ১০০টি আকাশচুম্বী বহুতল বাড়ি। বৈচিত্র্যময় সেগুলির আকৃতি। এই বাড়িগুলির বিভিন্নতলে আছে নানা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস,৪০০টির বেশি ব্যাঙ্ক, নানা ছোট বড় গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির অফিস আছে প্রায় ৫হাজার অফিস। এখানে রয়েছে ‘১১০তলা ফিনানসিয়াল ট্রেড সেন্টার’এর পাশেই অবস্থান বিচিত্র স্থাপত্যের ‘ওরিয়েন্টাল পার্ল টিভি টাওয়ার’ এর, আছে নতুন এক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ৮৮তলা ‘জিন মাও টাওয়ার’ যেটির টপ ভিউইং ডেস্ক থেকে চারদিকের বিস্তৃত এলাকার এরিয়াল ভিউ পেলাম। সব বহুতলগুলিই অহমিকা আর সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে একে অপরকে টেক্কা দিতে আকাশে মাথা তুলে সদর্পে দাঁড়িয়ে আছে।
‘লিউজিয়াযুই’ জায়গাটির নাম হয়েছে জায়গাটির এক মালিক পরিবারের নামে। আক্ষরিক অর্থ ‘লিউ পরিবারের বাসস্থান’ছিল এখানে। চীনের ক্ষমতাশালী মিঙ রাজবংশের রাজত্বকালে রাজকীয় শিক্ষানিকেতনের একজন বিখ্যাত পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন ‘লিউ শেন’। পুসিতে বুন্দের পাশেই রাস্তার ধারে আছে তাঁর একটি বিশাল কালো পাথরের তৈরি মূর্তি,একটি বেদীর ওপরে স্থাপিত। অবসর গ্রহনের থেকে আমৃত্যু তিনি লিউজিয়াযুই অঞ্চলেই বাস করতেন। তাঁদের আদি বাড়ি ও পারিবারিক সমাধিস্থল ছিল এখানেই।
দিনের বেলায় যে আকাশচুম্বী বহুতলগুলো মনে হয় গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়িয়ে আছে। রাতের বেলায় সেগুলির আলোকসজ্জিত রূপ অনুপম। সেই সুন্দর দৃশ্য দেখার জন্য নদীর বুকে ভেসে চলে অগনিত বিলাসতরণী। সেদিন রাতের আকাশের একাদশীর চাঁদের আলো ম্লান হয়েছিল নানা রঙের আলোয় সাজানো স্বপ্নপুরীর শোভার কাছে। মাঝে মাঝে আলোকমালায় সজ্জিত কিছু নৌকা ঢেউ তুলে এগিয়ে যাচ্ছিল একে অপরের থেকে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ভেঙ্গে যাচ্ছিল আলোকিত বাড়িগুলির প্রতিফলন। হুয়াংপু নদীর বুকে ভেসে চলা লঞ্চের ছাদ থেকে সেসব দীপাবলীর দৃশ্য ধরে রাখার জন্য অনেক পর্যটকের হাতের ক্যামেরাই সচল হয়ে উঠছিল,শাটার ঝল্সে বারাবার।
বৃহত্তর সাংহাইতে মনুষ্যবসতির ইতিহাস প্রায় ৬০০০ বছরের পুরনো,প্রথম বসতির খবর পাওয়া যায় ৪০০০খ্রিস্টপুর্বাব্দ থেকে। চীনা ঐতিহাসিকদের লেখা নথি অনুযায়ী চীনের ট্যাঙ রাজবংশের রাজত্বকালে সাংহাই ছিল প্রায় সমুদ্রের ওপরেই। ছিল এক বানিজ্য বন্দর। মিঙ রাজবংশের আমল থেকে উন্নয়ন শুরু হয়েছিল,যা আজ সাংহাইকে বিশ্বের মানচিত্রে বিশেষ জায়গা দিয়েছে।
১৬টি জেলা,২১০টি শহর আর কয়েকটি উপজেলা নিয়ে গঠিত বর্তমান সাংহাই মেইনল্যান্ড চিনের ক্রমপ্রস্ফুটিত উন্নত অর্থনীতির উজ্জ্বল স্মারক। ‘লিউজিয়াযুই’ স্কাইলাইনের দৃশ্য, নানা মিউজিয়াম,বুন্দ, তার পাশে পুসির বিখ্যাত ‘সিটি গড’-‘নগর দেবতার মন্দির,ইউ গার্ডেন,সাংহাই ফিউচার প্রজেক্ট ভবনের ‘গ্রে্টার সাংহাই প্ল্যান’এর ছবিদেখলেই বোঝা যাবে অদৃশ্য দুহাতে দুদিকে পুডং আর পুসিকে নিয়ে খুবই ভালো আছে হুয়াংপু। নানাধর্মের, নানা দেশে্ নানা জাতির মানুষের আশ্রয় এক উন্নত সাংহাই নগরের গর্বিত নদীমাতা সে,তাই সে আজ শান্ত স্নিগ্ধ রূপ নিয়ে বয়ে চলেছে। সাংহাইও উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, উচ্চমানের নানা খেলাধূলার ব্যবস্থা, জাতীয় পরব উদ্যাপন, আর উন্নয়নের মহাযজ্ঞের আয়োজন নিয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
বিশ্বের জানালা সব পর্ব