আগের পর্বে দেশবিদেশের ভূতেরা-কবন্ধ ও নাইটস অব এলবার্গ |
দে ওজেন
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের কাছে সোনিয়ান জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যে রাস্তা গেছে সে পথে রাতের বেলা যেতে অনেক দুঃসাহসীই দু বার ভাবেন। সেহানে ‘দে ওজেন’-এর বাস। নির্জন পথে অন্ধকার রাস্তায়গাড়ি চালাতে চালাতে হঠাৎই চালকের নজরে পড়েরসাতার মাঝখানে গজিয়ে উঠেছে সবজেটে আলো-আঁধারি একতাল কুয়াশা। আর সেই কুয়াশার মধ্যে থেকে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকে একটা বিরাট চোখ। ওই থেকে ডাচ ভাষায় দে ওজেন বা ‘দ্য আই’ নামের উৎপত্তি।
কুয়াশার মধ্যে থেকে অন্ধকার কিছু ছোটোছোটো মানুষের ছায়া গাড়ি আটকে রাস্তার ওপরে এদিকওদিক ছোটোছুটি করে, ভেসে আসে শিশুদের খিলখিল হাসির শব্দ। রাস্তা থেকে গাড়িকে ছুঁড়ে ফেলাই তাদের উদ্দেশ্য। কখনো কখনো গাড়ির কাচ ফুটে অঠে ছোটোছোটো রক্তাক্ত হাতের ছাপ। তারপর নিজেনিজেই ফের মিলিয়ে যায় তারা।
আজ থেকে প্রায় আশি বছর আগে ও জঙ্গলে এক পাগল খুনী নাকি বেশ কিছু শিশুকে খুন করে তাদের ছড়িয়ে ফেলে দিয়েছিল সে জঙ্গলের আনাচেকানাচে। সে খুনীর সন্ধান মেলেনি কোন। শুধু সেই শিশুদের আত্মা নাকি এখনো সবুজ কুয়াশা, ছায়ামানুষের দল আর রক্তমাখা হাতের ছাপদিয়ে নিজেদের অস্তিত্ত্ব জানান দেয় একলা মোটরিস্টকে নাগালে পেলে। তাদের মিলিত চেতনা এক অতিকায় চোখ হয়ে চেয়ে থাকে জীবন্ত মানুষের দুনিয়া থেকে আসা আগন্তুকের দিকে। হতভাগা মানুষগুলো আর তাদের ভূত ওই দে ওজেন নিয়ে একটা বই আছে। তার নাম De Kinderen van Het Bezeten Bos বা ভৌতিক অরণ্যের শিশুরা।
ভির
ভির হল নেপাল ও ভারতের কোন কোন জায়গার গ্ররহপালিত ভূতের নাম। সে ভূত জন্ম থেকেই ভূত। কোন মানুষ মরে তার সৃষ্টি হয় না। তবে মানুষের সাথে তার সম্পর্ক গভীর। বিশেষ বিশেষ মন্ত্রে তাকে বাঁধলে সে যিনি মন্ত্র বলছেন তাঁর পুষ্যি হয়ে যায়। ঘরের সব কাজকর্ম করে মুখ বুঁজে।
মালিকের ঘরের ছাদে পা দিয়ে মাথা নীচু করে সে ঘুরে বেড়ায়। দশ বিঘে জমি সে এক রাত্রে চষে দেয় মালিকের হুকুম পেলে।
তবে ভির পোষবার বিপদও কম নয়য়। কখনো মন্ত্রে ভুলটুল হলে যদি একবার সে ছাড়া পায় তাহলে মালিকের বংশের লোকুনকে জন্ম জন্ম ধরে মাথা গন্ডগোল করিয়ে রাখবে ভির। কাজেই সাবধান। ওসব যেন পুষতে না যাওয়াই ভালো।
জয়ঢাকি ভূতের আড্ডা