সম্প্রতি ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে মেরু-ভল্লুকদের সম্পর্কে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে দীর্ঘদিন উপবাস থাকলেও এদের শরীরে শক্তি খরচের হার সামান্যতম কমে না। অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে এমনটা হতে দেখা যায় না। উত্তর মেরুতে যেমন মেরু ভল্লুক বা শ্বেত ভল্লুক দক্ষিণ মেরুতে তেমন পেঙ্গুইন। এদের পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। বরফ ঝরা রাতে খোলা আকাশের নীচে পুরুষ এম্পেরর পেঙ্গুইনরা যখন ডিমে তা দেয় তখন তারা চার মাস না খেয়ে থাকে। এই সময়ে তারা অদ্ভুত উপায়ে শরীরের শক্তি খরচ কমিয়ে ফেলে। এই ক্ষমতা তাদের প্রকৃতিদত্ত।
গবেষকরা বলছেন, মেরু ভল্লুকদের এমন কোনো ক্ষমতা নেই। শীতকালে যখন চারদিক বরফে ঢেকে যায় তখন অন্যান্য পশুপাখিরা শক্তি খরচ কমানোর জন্য শীতঘুমে গেলেও এরা যায় না। সন্তানসম্ভবা মেয়ে ভল্লুকরা বিশ্রাম নিলেও অন্যরা খাবারের খোঁজে বরফের উপর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। এখন প্রশ্ন হল, মুখের সামনে যদি পর্যাপ্ত খাবার থাকে তাহলেও কি এরা ঘুরে বেড়াবে, না কি যতদিন খাবার পাওয়া যাবে ততদিন তারা সেখানে অস্থায়ীভাবে থেকে যাবে? যেমন অন্যান্য ভল্লুকদের ক্ষেত্রে দেখা যায়?
এপ্রিল-জুলাই মাস সুমেরু অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল। তখন আর্কটিক এলাকার দক্ষিণাংশের বরফ গলে যায়। মেরু-ভল্লুকদের প্রিয় খাদ্য সিল তখন দলবেঁধে জলে সাঁতার কাটে। সেইসময় জল থেকে দু’চারটে পটাপট তুলে নিলেই হল। গবেষকরা তেমনটাই আশা করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা সবিস্ময়ে দেখলেন যে এ ব্যাপারে এদের তেমন কোনো আগ্রহই নেই। বরং বরফ যত গলতে থাকে এরা ততই আরও উত্তরে সরে যেতে থাকে— যেখানে জমাট বরফ ছাড়া তখন কিছুই আর চোখে পড়ে না। ওই বরফ-রাজ্যে কখনও-সখনও খাবার পেলে তাতেই এরা খুশি। দেখা গেছে এই কঠিন পরিস্থিতিতে কখনও কখনও এদের বছরে প্রায় আটমাসই উপোস করে থাকতে হয়। এর ফলে এদের শরীরে বিপাকীয় কার্যের কোনো পরিবর্তন ঘটে কী না তা এতদিন জানা ছিল না। গবেষকদের দাবি তাঁদের কাছে এখন এই বিষয়টা আর অজানা নয়। এই গবেষকদলের অন্যতম সদস্য হোয়াইটম্যানের (Whiteman) কথায় “This paper gives us the first solid understanding of polar bear metabolism in summer, especially out on the sea ice over deep water far from shore, where bears have never been sampled before.” এছাড়াও ওই গবেষণাপত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে তা হল, “….activity and temperature patterns recorded for polar bears in summer were not comparable to patterns for hibernating bears in winter dens.”