দীনেশচন্দ্রকে নিয়ে আরো কিছু স্মৃতিচারণঃ
আমার বাবা -চুমকি চট্টোপাধ্যায় আমার বাবা-আরো কিছু মুহূর্ত চুমকি চট্টোপাধ্যায়
স্মরণে দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
‘কিশোর ভারতী’তে তখন সবে ‘মানুষে অমানুষে’ ধারাবাহিক শুরু হয়েছে। সেই সময় আমি ওখানে ছবি আঁকার সুযোগ পেলাম। ধারাবাহিকের হেডপিসটা ওঁদের পছন্দ হচ্ছিল না। অন্য কেউ এঁকেছিলেন। সেটাই প্রত্যেক সংখ্যায় ছাপা হচ্ছিল বটে, কিন্তু প্রধান সম্পাদকের ছবি পছন্দ হয়নি। তখন ত্রিদিবকাকু আমাকে বললেন, “তুমি এটা দিয়েই শুরু করো। যদি পেরে যাও বাবার কাছে তুমি গুড বুকে।”
লেগে পড়লাম। একবার করে আঁকি, কাকু দেখেন, আর বলেন, “নাঃ, হচ্ছে না।”
আমার বুক শুকিয়ে যায়। ভাবি, হয়ে গেল। আর হয়তো সুযোগ দেবেন না।
কিন্তু প্রত্যেক বারই কাকু বলতেন, “আবার করো। সময় আছে। বাবাকে দেখানোর মত হলেই আমি দেখাব।”
বারদশেক করার পর কাকুও হাঁফিয়ে উঠলেন। বললেন, “তুমি কিছুতেই টুপিটা আঁকতে পারছ না। পুলিশ অফিসারের টুপি এরকম হয় না।”
এরপর কাকু একটা বই দিলেন। তাতে ভারতীয় পুলিশ অফিসারের নানান টুপির ছবি। তার মধ্যে থেকে একটা টুপি দেখিয়ে বললেন, “এই টুপিটা হবে।”
পরে জেনেছিলাম ওই বইটা ওঁর বাবার অমূল্য সংগ্রহ এনসাইক্লোপিডিয়ার আলমারি থেকে কাকু বের করে এনেছিলেন।
আরো কয়েকবারের চেষ্টায় টুপি হল, কিন্তু এবার ঝামেলা পাকাল উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। মানে টুপিটা যার মাথায় পরানো হবে, সেই পুলিশ অফিসার। কিছুতেই তাঁর চোখ দুটোতে সেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আনতে পারছিলাম না যেমনটা বর্ণনায় ছিল। বার বার আঁকছি কিন্তু হচ্ছে না। বুঝতেও পারছি না কী করলে হবে।
কিন্তু লেগে আছি। রোজ আসি কিশোর ভারতীতে। এসেই কাগজ, পেনসিল নিয়ে বসে পড়ি। ত্রিদিবকাকুও লেগে আছেন। বলে যাচ্ছেন, “না গো। হয়নি। আবার করো। বিন্দেশ্বরীদা মাঝে মাঝেই চা দিয়ে যান। চুমুক দিয়ে আবার নতুন উদ্যমে পেনসিল ঘসে চলি।
একদিন থাকতে না পেরে তরুণদা বলেই ফেললেন, “দ্যাখো ত্রিদিব, ওকে দিয়ে হবে না। তুমি বেকার চেষ্টা করছ। মজার কার্টুন-ফার্টুন দাও ওকে। এসব সিরিয়াস ছবি ও পারবে না।”
শুনেই কাকুর চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। তরুণদার দিকে ফিরে বললেন, “আমি অনেক ছেলে দেখেছি তরুণদা। এ যদি চেষ্টা করে, হবে। এর হাতে ড্রইং আছে। শুধু প্রশিক্ষণটা নেই।”
তরুণদা মুচকি হেসে চুপ করে গেলেন। আমি ঘসে চললাম। সেই সময় একদিন, খুব লম্বা ছিপছিপে এক ভদ্রলোক তিনতলা থেকে নেমে এসে সোজা কাকুর ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি চললাম বুঝলে!”
কাকু নিজের টেবিল ছেড়ে উঠে এলেন। বললেন, “চলুন বাপি। আমি একটু এগিয়ে দিই।”
তিনি হাসিমুখে বললেন, “আরে না না। তুমি কাজ করছ করো। আমি এলাম।”
কাকু তবু বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে। কাকুর ঘরের বাইরেই ছিল আমার টেবিল। বেরিয়েই তিনি দেখলেন আমি তখনো ব্যর্থ ঘসাঘসি করে চলেছি। তিনি সেই সুন্দর মত ভদ্রলোককে বললেন, “এক মিনিট বাপি। আপনি একটু দাঁড়ান।”
আমার সামনেই দুজনে দাঁড়ালেন। কাকু বললেন, “এঁর চোখদুটোকে দ্যাখো। আমি একটু হাল্কাভাবেই তাকালাম। কিন্তু তাকিয়েই ঘাবড়ে গেলাম। চশমার কাচের ভেতরে যে চোখদুটো আমার দিকে তাকিয়ে আছে তার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। আপনা থেকেই আমার চোখ নেমে এল।
কাকু বললেন, “দেখেছ ভালো করে? শুধু দেখা না। লক্ষ করো। এই চোখ চাই তোমার আঁকাতে। আসুন বাপি।”
বলে সেই ভদ্রলোককে নিয়ে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলেন। শুনতে পেলাম ভদ্রলোক বলছেন, “কী ব্যাপার গো? ওই ছেলেটি কে?”
কাকুর উত্তরটা আর শুনতে পেলাম না। আমার মনে তখন শুধু ওই চোখ দুটোই ভাসছে। শান্ত অথচ অস্বাভাবিক তীক্ষ্ণ। এর আগে অনেক জায়গায় পড়েছি, শুনেছি – এমন চোখ যেন ভেতর অবধি দেখে নেয়… এই প্রথম নিজে দেখলাম।
একের পর এক ড্রইং করে চললাম। কোনটা হচ্ছে, কোনটা হচ্ছে না তখন আর ভাবছিলাম না। করে যাচ্ছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর কে যেন পাশ থেকে সোল্লাসে বলে উঠলেন, “এই তো হয়েছে!”
চমকে দেখি কাকু। কথাটা বলেই আমার টেবিল থেকে একটা কাগজ তুলে নিলেন। সেটার পরে আমি তখন আরো চারটে ড্রইং করে ফেলেছি। মিনমিন করে বললাম, “হয়েছে?”
উনি একগাল হেসে বললেন, “ইয়েস। দাঁড়াও। বাবাকে দেখিয়ে আনি।”
চটি ফটফটিয়ে কাকু কাগজটা নিয়ে ওপরে উঠে গেলেন। আমি ঢিবঢিব বুকে বসে রইলাম। মিনিটপাঁচেক পরেই আবার চটি ফটফটিয়ে কাকু নেমে এলেন। দেখলাম হাতে আমার আঁকাটা নেই। মুখ গম্ভীর। আমাকে বললেন, “বাবা তোমাকে ডাকছেন। ওপরে যাও।”
বলে নিজের ঘরে ঢুকে লিখতে বসে গেলেন। কিশোর ভারতীতে আমার আসা-যাওয়ার তখন সবে সপ্তাহদুয়েক হয়েছে। আমার গন্ডি ছিল একতলার প্রেস আর দোতলায় এডিটোরিয়াল অবধি। কিন্তু সেই কদিনেই একটা জিনিস বুঝে গেছিলাম, তিনতলায় যাকে ডাকা হয়, তার সেদিন কপাল খারাপ থাকে। ম্যানেজার অজিতবাবু থেকে শুরু করে দারোয়ান মন্ডলদা অবধি এই ডাক পড়লেই তঠস্থ হয়ে উঠতেন। আজ আমার পালা। বুঝেই গলা শুকিয়ে গেল। কাকুর ঘরের দিকে গলা বাড়িয়ে বললাম, “যাব ওপরে?”
কাকু খুব দ্রুতহাতে কিছু একটা লিখছিলেন। আমার কথায় একটু বিরক্ত হয়েই বললেন, “হ্যাঁ। বললাম তো। বাবা ডাকছেন। তাড়াতাড়ি যাও। উনি বসে আছেন। ওপরে উঠেই বাঁদিকের ঘর। বলেই আবার লেখায় ডুবে গেলেন।”
যা থাকে কপালে দেখা যাবে, ভাবতে ভাবতে সিঁড়ি দিয়ে উঠলাম। ওপরটা খুব চুপচাপ। আরও ভয় ভয় করতে লাগল। কী বলে ওঁকে সম্বোধন করব, সেটা একবার ভেবে নিলাম। কাকুর বাবা যখন তখন দাদুই বলা উচিত। কিন্তু অনেকে আবার দাদু বললে চটে যান। সেরকম কেস হবে না তো? এইসব ভাবতে ভাবতেই সেই ঘরের সামনে পৌঁছে গেলাম। দরজাটা আধখোলা। ভেতরে একজন সাদা ফতুয়া আর ধুতি পরা মানুষ চেয়ারে বসে আছেন। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। একটা মোটা অচেনা বইয়ের পাতা ওলটাচ্ছেন। মাথা বইয়ের দিকে নামানো। আমাকে দেখতে পাননি। মনে জোর এনে বললাম, “আমাকে ডেকেছেন?”
কথাটা বলতেই তিনি মুখ তুললেন। মুখটা দেখেই মনে হল এ মানুষের সাথে চালাকি চলবে না। ধপধপে গায়ের রঙ। ব্যাকব্রাশ করা কুচকুচে চুল। হয় মাথায় তেল মেখেছেন নয়তো সবে স্নান করে এসে বসেছেন। পাতলা ঠোঁট দুটো একটু বেশি বেশি টুকটুকে। কিন্তু তার থেকেও আমাকে অবাক করল ওঁর কাঁধ। মনে পড়ল আমাদের পাড়ায় পণ্ডিতজির কুস্তির আখড়া ছিল। পন্ডিতজির এইরকম কাঁধ দেখেছিলাম। মজবুত। চওড়া।
স্পষ্ট জোরালো গলায় প্রশ্ন এল, “তুমিই ওঙ্কার নাকি?”
এবার ফস করে বলে ফেললাম, “হ্যাঁ দাদু।” বলেই সতর্ক হলাম। সম্বোধন শুনে উনি নিঃশব্দে হাসলেন। তাতে ওঁকে আরও সুন্দর দেখাল। বললেন, “দাদু ডাকলে? তা বেশ, বেশ। তাহলে আমিও তোমাকে ভাই ডাকি। এসো ভাই। ভেতরে এসো।”
চৌকাঠ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। মনে হল কোনও লাইব্রেরিতে ঢুকলাম। ঘরটা বিরাট। আমি বস্তির ভাড়া বাড়িতে মানুষ। এত বড় ঘরে গিয়ে দাঁড়ানো কোন ছার, চোখেই দেখিনি। কিন্তু সেই বিশাল ঘরটায় টেবিল চেয়ার ছাড়া আর কিচ্ছু নেই। একদিকে বিরাট বিরাট দুটো খড়খড়ি পাল্লা দেওয়া জানলা। তার সামনেই টেবিল আর খানতিনেক চেয়ার। সেখানেই তিনি বসে আছেন। আর ঘরের বাকি তিনদিকেই রয়েছে আবলুশ রঙের প্রায় ছাদ ছুঁই ছুঁই আলমারি। সব কটাই বইয়ে ঠাসা। বেশির ভাগই ইংরাজি। কিন্তু বাংলাও কম নয়।
আমি ঢুকে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তিনি বললেন, “বোসো ভাই। ওই চেয়ারে বোসো।” বলে একটা ভারি কালো কাঠের চেয়ার দেখালেন। বসে পড়লাম। দাঁড়িয়ে থাকলে টেনশান বেশি হয়। টেবিলের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে দেখলাম সেখানে আমার আঁকাটা একটা পেপার ওয়েটের নিচে আমাকে ভেংচি কাটছে। যেন বলছে, দ্যাখ, এবার কেমন লাগে।
খুব যত্ন করে একটা বুক মার্ক দিয়ে তিনি হাতের বইটা বন্ধ করলেন। তারপর টেবিল থেকে আমার আঁকাটা তুলে নিলেন। এইবার আমার পেট গুড়গুড় করতে লাগল। দু-এক সেকেন্ড ছবিটার দিকে স্মিতমুখে তিনি তাকিয়ে রইলেন। তারপর নামিয়ে রেখে বললেন, “কার কাছে আঁকা শিখেছ?”
শুনেই আমার হয়ে গেল। বুঝলাম কেস জন্ডিস। ছবি পছন্দ হয়নি। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হড়বড় করে বলতে লাগলাম, “না, মানে, আমি কোথাও সেরকম ভাবে শিখিনি, ওই নিজে নিজেই, মানে বই দেখে দেখে, মানে, কাকু বললেন তোমার হবে, তাই, আমি শিখতে চাই দাদু। যদি আমাকে একটু সুযোগ দেন। আমি খুব কিশোর ভারতী পড়ি। খুব ভালো লাগে। আমি এখানে আঁকতে চাই দাদু- মানে আপনি…”
উনি হেসে ফেলে বললেন, “বুঝেছি, বুঝেছি। তুমি কি জল খাবে?”
আমি ঢক করে ঘাড় নেড়ে বললাম, “হ্যাঁ।”
উনি ঘাড় ঘুরিয়ে কাউকে উদ্দেশ্য করে হাঁক দিলেন, “অ উপেন। এখানে এক গ্লাস জল দিয়ে যা বাবা।”
তারপর আমার দিকে ফিরে বললেন, “শোনো ভাই। আমি নিজে ছবি আঁকতে পারি না। কিন্তু ছবি ভালবাসি। বহু ভাল ভাল শিল্পীর সাথে আমার বন্ধুত্ব আছে। আমার ভাই খুব ভাল ছবি আঁকত। আমাদের পরিবারে ছবির চর্চা আছে। হাতের টান দেখলে বুঝতে পারি কার হবে আর কার হবে না।”
শুনেই আমার মাথা ঝুঁকে পড়ল। এর পরের নির্মম কথাটার জন্য মনে মনে নিজেকে তৈরি করতে লাগলাম। ততক্ষণে আমি বুঝে গেছি উনি অত্যন্ত ভদ্র একজন মানুষ। তাই অন্য কাউকে না বলে নিজেই আমাকে বলার জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন যে, আমার দ্বারা হবে না। কিন্তু ত্রিদিবকাকু যে তখন বললেন হয়েছে! তাতে কী? প্রধান সম্পাদক তো ইনি! এঁর যদি না মনে হয় তখন কাকুই বা কী করবেন?
আড়চোখে দেখলাম উনি ছবিটা আবার তুলে নিয়েছেন হাতে। সেটার দিকে তাকিয়ে বললেন, “তোমার কাজটা আমার মন্দ লাগেনি। তবে আমার ধারণা তুমি আরো ভাল পারবে ভাই।”
অ্যাঁ !!! ঠিক শুনছি তো? এ তো রীতিমত প্রশংসা !!! তার মানে আমার কাজ ওঁর পছন্দ হয়েছে !! জয় মা ! তড়াক করে উঠে পড়ে বললাম, “হ্যাঁ দাদু। আমি এক্ষুনি আবার এঁকে আনছি।”
উনি হেসে হাত তুলে বললেন, “আরে বোসো বোসো। আগে শোনো আমি কী বলছি। আমি ভুলও তো বলতে পারি। তুমি আর্টিস্ট। শুনবে সবার, করবে নিজের। নাহলে ভাল ছবি হবে না। আগে মন দিয়ে শোনো।”
এইসময় একজন জল দিয়ে গেলেন। সম্ভবত তিনিই ঊপেন। বসে পড়ে ঢকঢক করে গ্লাস খালি করে দিলাম। তখন আমার সাংঘাতিক আনন্দ হয়েছে। ভয় কেটে গিয়ে একটা বিশ্বাস এসে গেছে যে আমি পারব। বললাম, “আপনি যেমন বলবেন আমি করব দাদু।”
আবার সেই মিষ্টি হাসি দিয়ে তিনি বললেন, “বেশ। তার আগে বলো এই অফিসারের ছবিটা তুমি ক’বার এঁকেছ?”
একটু ভেবে বললাম, “দু’সপ্তাহ ধরে এটাই আঁকছি দাদু। হচ্ছিল না। প্রায় খান ত্রিশেক হবে।” উনি বললেন, “বেশ। কেন হচ্ছিল না বুঝতে পেরেছ?”
আমি বললাম, “না।”
উনি জিজ্ঞাসা করলেন, “লেখাটা পড়েছিলে?”
আমার সোজা উত্তর, “না দাদু।”
শুনেই উনি সোজা হয়ে বসলেন। তারপর একটু গম্ভীর হয়ে বললেন, “গল্পের ছবি আঁকছ গল্প না পড়েই? সে কী?”
শুনে একটু ঘাবড়ে গেলাম। মিনমিন করে বললাম, “না মানে, কাকু বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কী ছবি হবে। মানে আগেই একজন এঁকে দিয়েছেন তো! কাকু বললেন ওইরকমই হেডপিসটা হবে। তবে আরো ভালো করতে হবে।”
“আরে ধ্যেত!” গলার আওয়াজে আমি এবার চমকে উঠলাম, “এভাবে হয় নাকি? শোনো। যদি ভালো ইলাশট্রেশন করতে চাও, তাহলে এ ভুল দ্বিতীয়বার কোর না। লেখা না পড়ে কক্ষনো ছবি আঁকবে না। এবার বুঝেছি গন্ডগোল কোথায়। এই নাও।”
বলে টেবিলের ওপর থেকে একগোছা কাগজ আমাকে দিয়ে বললেন, “এটা আমার লেখার সেকেন্ড প্রুফ। পড়তে অসুবিধে হবে না। আর যদি কোনও জায়গায় বুঝতে না পারো, সোজা আমার কাছে চলে আসবে। এটা সবটা ভালো করে পড়ো, তাহলেই বুঝে যাবে কেমন হবে তোমার ছবি। লেখা না পড়ে কি ছবি আঁকা যায় ভাই? আর আঁকলেও সে ছবিতে প্রাণ ফুটে ওঠে না। গল্পের চরিত্রের সাথে আকাশ পাতাল তফাৎ হয়ে যায়। বুঝলে? যাও, তুমি আঁক। তোমার হবে।”
একতাড়া কাগজ নিয়ে তিনতলার ঘর থেকে নেমে এলাম। মনটা তখন ভরে আছে। কানে বাজছে দাদুর কথাগুলো, “তুমি আর্টিস্ট। শুনবে সবার, করবে নিজের। নাহলে ভাল ছবি হবে না। যদি ভালো ইলাশট্রেশন করতে চাও, তাহলে এ ভুল দ্বিতীয়বার কোর না। লেখা না পড়ে কক্ষনো ছবি আঁকবে না। লেখা না পড়ে কি ছবি আঁকা যায় ভাই? আর আঁকলেও সে ছবিতে প্রাণ ফুটে ওঠে না। গল্পের চরিত্রের সাথে আকাশ পাতাল তফাৎ হয়ে যায়। বুঝলে? যাও, তুমি আঁক। তোমার হবে… ”
আঁকার টেবিলে বসার আগে মনে মনে প্রণাম জানিয়ে বললাম, “যতদিন ইলাস্ট্রেশন করব আপনার কথা মনে রাখব দাদু… ”
স্মরণীয় যাঁরা সব এপিসোড একত্রে